দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-২ আসন থেকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিউদ্দিন মহারাজ। তিনি হারিয়ে দিয়েছেন তিনবারের মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে।
মহিউদ্দিন মহারাজ পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মঞ্জুর সাবেক এপিএস। মহিউদ্দিন মহারাজের নির্বাচনি এজেন্ট আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বিজয়ের বিষয়টি ঢাকা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন।
ঈগল প্রতীকে মহিউ্দ্দিন পেয়েছেন ৯৯ হাজার ২৬৮ ভোট। আর মঞ্জু পেয়েছেন ৭০ হাজার ৬৮১ ভোট।
মঞ্জুকে হারিয়ে “প্রতিশোধ” নিলেন তার সাবেক এপিএস মহিউদ্দিন মহারাজ। জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পিরোজপুর-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। তার বাড়ি পিরোজপুর-২ আসনের ভান্ডারিয়া সদরে। আর স্বতন্ত্র পদে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন তার সাবেক এপিএস পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজ। মহারাজ পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রশাসক ছিলেন। তার বাড়ি ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলীখালী ইউনিয়নের হরিণপালায়।
নির্বাচনের আগে ভান্ডারিয়ায় এক মতবিনিময় সভায় আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর উদ্দেশে মহারাজ বলেছিলেন, “আমি আপনাকে কথা দিয়েছিলাম আপনার জীবদ্দশায় আমি আপনার বিরুদ্ধে নির্বাচন করব না। কিন্তু আপনি বাধ্য করেছেন।”
মহারাজ আরও বলেছিলেন, “আমার বাবার পরে যদি পৃথিবীতে কাউকে শ্রদ্ধা করে থাকি তা আপনাকেই করেছিলাম। কিন্তু আপনি আমাদের অপমানিত করেছেন বার বার।”
মহারাজ বলেন, “আমার বাবা ধার্মিক লোক ছিলেন। কিন্তু আপনি আমি ও আমার ভাইয়ের সামনে আপনি তাকে রাজাকার বলেছেন। ভান্ডারিয়ার মানুষ যদি আমার বাবা-দাদাকে রাজাকার বলে, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। আর যদি আপনি মিথ্যা বলে থাকেন তা হলে আপনার বিরদ্ধে আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করব।”
মহিউদ্দিন মহারাজের বাবা প্রয়াত শাহাদাৎ হোসেন ছিলেন, তেলীখালী ইউনিয়নের একাধিকবারের নির্বাচিত স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তার মেজ ভাই মিরাজুল ইসলাম ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান। আরেক ভাই শামছুদ্দীন তেলীখালী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি। আরেক ভাই সালাউদ্দিন ব্যবসায়ী।
১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত এরশাদ সরকারের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন মঞ্জু। ১৯৮৮-১৯৯০ সালে একই সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ফের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। ২০১৮ সালে মন্ত্রিসভার দায়িত্ব পুনর্বণ্টন হলে পানিসম্পদ মন্ত্রী করা হয় মঞ্জুকে।