মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের ইংরেজি সম্মান শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী জারিন তাসনীম খান প্রিয়ন্তী। ঢাকায় এসেছিলেন কানাডাফেরত বোনের সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু বেইলি রোডের রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। প্রিয়ন্তী এখন শুধুই স্মৃতি।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্তান সায়মাসহ কানাডা থেকে ঢাকায় আসেন প্রিয়ন্তীর বড় বোন তাসনোভা খান সুহা। বোনের সঙ্গে দেখা করতে প্রিয়ন্তী বাবা আইনজীবী আওলাদ হোসেন খান, মা গৃহিণী মেহেরুন্নেসা ও বড় ভাই সাজেদ হোসেন পিয়াল ঢাকার ইস্কাটনে যান।
সুহা তার মেয়ে সায়মা ও বোন প্রিয়ন্তীসহ মামিশাশুড়ির সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের “কাচ্চি ভাই” রেস্টুরেন্টে যান। আগুন লাগার পর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের দ্বিতীয় তলায় সঙ্গের তিনজন বের হতে পারলেও প্রিয়ন্তীর হাত ছুটে যায়।
প্রিয়ন্তীর ভাই সাজেদ হোসেন পিয়াল বলেন, “আগুন লাগার পর রেস্টুরেন্টটি ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ায় কিছু দেখা যাচ্ছিল না। ঘটনার পরপরই সাড়ে চার বছরের সায়মাকে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যান সুহার মামিশাশুড়ি। আর সুহা ছোট বোন প্রিয়ন্তীকে হাতে ধরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভবনের উপর থেকে সিড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে লোকজন নামছিল, আর ধোয়ায় মধ্যে এক পর্যায়ে প্রিয়ন্তীর হাতটি ছুটে যায়। পরে সে আর বেরুতে পারেনি।”
প্রিয়ন্তীর মৃত্যুর খবর মুন্সীগঞ্জে ছড়িয়ে পড়লে সহপাঠী, শিক্ষক ও স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজনরা তাদের বিনোদপুরের বাড়িতে ভিড় করেন। তবে প্রিয়ন্তীর লাশ এখনো ঢাকায়।
সদ্য এলএলবি পাস করা পিয়ালও বোনের সঙ্গে ঢাকা গিয়েছিলেন। কিন্তু মর্মান্তিকভাবে হারানো বোনের দাফনের ব্যবস্থা করতে বাড়ি ফিরে এসেছেন। পরে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে বাদ আসর দাফনের সময় নির্ধারণ করেছেন।
প্রিয়ন্তী এইচএসসি পাস করেন শহরের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহমেদ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। তার সাবেক এই শিক্ষালয়টিতেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এই করুন মৃত্যু কেউই সহ্য করতে পারছেন না। প্রিয়ন্তীর সোনালি স্বপ্ন আগুনে পুরে ছাই হয়ে গেছে।